আপনার ব্যবসার একটি শক্তিশালী সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কৌশল কেন প্রয়োজন ?
বর্তমান যুগে আমাদের স্মার্টফোন ব্যাবহার দৈনদিন যে হারে বেড়ে চলেছে তা নতুন করে বলার কিছু নেই। আর এই স্মার্টফোনে থাকা নিত্য নতুন অ্যাপ আমাদের আসক্তি করে তুলছে। এর মধ্যে বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ গুলো ব্যাবহার করে, যেখানে রয়েছে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, লিঙ্কডইন, রেডিট, স্ন্যাপচ্যাট ইত্যাদি। এর মাঝে আপনি যদি বেবসিক হয়ে থাকেন তাহলে এই বিশাল ডিজিটাল গ্রাহকের মনোযোগ কাজে লাগিয়ে আপনার ব্যাবসার প্রচার করে নিতে পারেন। নিচে এই বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।
যে বিষয় গুলো নিয়ে এখানে কথা বলা হয়েছে –
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
- এখানে গ্রাহকের পরিধি কতটা?
- এখানে কেন বিনিয়োগ করবেন?
- এজেন্সি ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারনা
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন করবেন?
সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা
প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থার তুলনায় সামাজিক মিডিয়া মার্কেটিংয়ের অ্যাডভান্টেজ পর্যাপ্ত বেশি ও সুবিধাজনক। এ মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে বিশাল অ্যাডভান্টেজ হচ্ছে আপনি যে কোনো ব্র্যান্ড, প্রোডাক্ট বা সেবা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় অনলাইন অ্যাডসের দ্বারা প্রমোশন বা মার্কেটিং করতে পারবেন।
এ ধরনের মার্কেটিংয়ে খুবই স্বল্প টাইমের মধ্যে ক্রেতার নিকট পৌঁছে যেতে পারবেন। মুহূর্তের মধ্যেই ক্রেতার সাথে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব। ফলে ঈষৎ সময়ের মধ্যে আপনি আপনার পণ্যের প্রচার বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে উপযুক্ত হবেন।
এ ছাড়াও সোশ্যাল গণমাধ্যম প্রচার নীতিমালা অনুসরণ করে টার্গেট করা কাস্টমারদের কাছেই পণ্যের বিকাশ চালানো যায়। যেমন, কেউ যদি নারীদের কাপড় নিয়ে ব্যবসা করে, সেক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো শুধু নারীদের কাছেই পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দিতে সুযোগ করে দেবে।
একইভাবে যদি কেউ বই বিক্রি করতে চায় তাহলে ডিসপ্লে করা বইগুলো বইপ্রেমীরাই দেখতে পারবে। ফলে পণ্যের বিজ্ঞাপন ওইসব লোকের নিকট পৌঁছানোর সম্ভবনা কম, যারা এ পণ্য সম্মন্ধে আগ্রহী নন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে দুই ভাবে প্রচার করা যায়,
এক) অরগানিক মার্কেটিং বা ফ্রি তে প্রচার করা – এখানে নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে পেজ তৈরি করে নিজেই বা বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে প্রচার করা এবং বিভিন্ন গ্রুপ গুলোতে আপনার পণ্য বা সার্ভিসের বিষয়ে পোস্ট করেও বিনামুল্যে প্রচার চালানো যায়। কোন কোন সময় এই ভাবে ব্যাপক মানুষের কাছে পৌঁছোনো যায়।
দুই) পেইড মার্কেটিং বা টাকার বিনিময়ে প্রচার করা – এখানে আপনি যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টি ব্যাবহার করছেন তাদের বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য আলাদা টুল থাকে যেটার সাহায্যে বা ব্যাবহার করে নির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন। এতে এই প্ল্যাটফর্মের টুল বিষয়ে পূর্ণ ও সঠিক ধারনা থাকা প্রয়োজন।
আপনি প্রচলিত মার্কেটিং পন্থা গুলোর পরিবর্তে সোশ্যাল মাধ্যমে প্রচার করলে খুব অল্প সময়ে, অল্প খরচে বহুগুণ ফল পাবেন। এখানে আপনার প্রত্যেক পয়সার হিসেব স্বচ্ছ ভাবে পেয়ে যাবেন এবং আপনার কাঙ্খিত গ্রাহকের কাছে পন্যের প্রচার করতে পারবেন।
এর পর আমরা কথা বলি এই বিষয়ে আপনার এজেন্সি দিয়ে কাজ করানো কতটা ঠিক হবে?
এজেন্সি ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারনা
উপরে যে সব বিষয়ে আলোচনা করা হল তা যদি আপনি নিজেই করতে পারেন তাহলে এজেন্সি দিয়ে কাজ করানোর কোন কোথায় আসে না। যদিও আমরা পুরো ব্যাপারটি অতি সংক্ষেপে আলোচনা করলাম, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিষয়টা কিন্তু অনেক বড় একটা জগত। এখানে আপনার ব্যাবসা অনুযায়ী স্ট্রাটেজি সাজানো, সেইভাবে ক্রিয়েটিভ ডিজাইন করা ও সাথে আরও এডিসনাল টুল সংযোগ করে বিস্তারিত ব্যাপারটি পরিচালনা করা সকলের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না।
ধরে নিন আপনার ফেসবুক পেজ থেকে কিছু একটা পোস্ট করলেন, এই পোস্টের পরেই নিচে দেখতে পারবেন Boost Now লেখা চলে এসেছে। এর মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে আপনি আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে আপনার পোস্ট পৌছতে পারবেন। আর অধিকাংশ ফেজ ওনার বা এজেন্সি এই ভাবেই প্রচার করে। এই পদ্ধতিটা বেশ কিছু সময়ের জন্য ঠিক আবার অনেক টায় ভুল। এখান থেকে আপনি নির্দিষ্ট গ্রাহক সেট করলেও সঠিক মাত্রার গ্রাহকের কাছে আপনার পোস্ট পৌছোয় না। এর ফোলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়ে যায়। এই কাজের জন্য আলাদা ভাবে Facebook Ads Manager ড্যেশবোর্ড আছে যেটার সঠিক বেবহারে প্রচারের ভালো ফল পাবেন।
আপনার বিজ্ঞাপনের সঠিক প্রচার বেশ কিছু বিষয়ে নির্ভর করে,
- আপনার পণ্য বা সার্ভিসের ধরন অনুযায়ী
- আপনার বিজ্ঞাপনের বাজেটের উপর
- আপনি সঠিক অডিয়েন্স টারগেটিংয়ের উপর
- আপনার পোস্টের ডিজাইন দুর্দান্ত হতে হবে
- পোস্টের মধ্যে ভালো Hook Word থাকতে হবে
- Call to Action সঠিক হতে হবে
- মূল ক্যাম্পেইন এর সাথে সাপোর্ট পোস্ট থাকতে হবে
- আপনি কোন সময়ে বিজ্ঞাপন চালাচ্ছেন
- ওয়েবসাইট থাকলে pixel লাগানো আছে কি না
- ক্রিয়েটিভ গুলো multiple format এ থাকতে হবে
- ফেসবুকের অ্যাড নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে।
এছাড়াও খেয়াল করবেন আপনার এজেন্সি উন্নতমানের ডিজাইন দিতে পারবে কি না? অনেকেই ফোন দিয়েই যেমন তেমন দেজাইন করে পোস্ট করে দেয়। যেখানে ওই একই দামে অন্য জায়গায় উন্নতামানের দেজাইন পেয়ে যেতেন। পোস্ট গুলোতে ব্র্যান্ড থিম বজায় রাকছে কি না সেটাও দেখবেন। এর ফলে আপনার গ্রাহকরা খুব তাড়াতাড়ি আপনার পেজের পোস্ট চিন্তে পারবে। সঠিক রঙ নির্বাচন আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড তৈরি করতে অনেক ভুমিকা রাখে।
এর সাথে দেখবেন আপনি যে পরিমান অর্থ বা বাজেট সেট করে রেখেছেন তার পুরো রিপোর্ট আপনি পাচ্ছেন কি না। জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের রেট কি চলছে এবং সেখানে ওই রেটে কি পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে সেটা দেখেও বুঝতে পারবেন আপনি যে এজেন্সি ভাড়া করেছেন বা করতে চলেছেন তাদের রেট ও সার্ভিস সুবিধার কি না।
মনে রাখবেন খুব সস্তা হলেও ঠকবেন আবার প্রয়োজন বা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হলেও ঠকবেন। কিন্তু যারা ভালো এজেন্সি তারা যথেষ্ট উন্নতামানের পরিষেবা অতি দক্ষতার সাথে করে থাকেন। সেক্ষেত্রে একটু উনিশ বিশ থাকবেই।